Conscience in Art by O. Henry - Bangla Translation - কনসিয়েন্স ইন আর্ট – ও. হেনরী - বাংলা অনুবাদ গল্প |
প্রতারণার
আইনসঙ্গত রাস্তাটা কিছুতেই আমার পার্টনার অ্যাণ্ডি টাকারকে শেখাতে পারলাম না, আক্ষেপ
করছিল জেফ পিটার্স। আসলে ওর কল্পনাশক্তি এত বেশি যে সৎ থাকা ওর ধাতে সয় না। বেশ ছিল
ফ্যামিলী অ্যালবাম, আরশোলা মারার ওষুধ, মাথাধরা সারানোর পাউডার এইসব বিচিত্র জিনিষ মিডল ওয়েস-এ ফেরি করে, কিন্তু বেশিদিন একটা কাজ নিয়ে থাকতে পারে
না।
হঠাৎ
একদিন এসে বললো-এইসব দু’পয়সার লোকদের সঙ্গে
কাজ করে পোষাচ্ছে না, এসো, একটা বড় দাও মারার
চেষ্টা করি।
-কি
রকম?
-পিটসবার্গের
ধনী লোকেরা দুহাতে পয়সা খরচ করে। নিউইয়র্কে হোটেলে থাকতে এসে তারা দশদিন খাবার জন্য
খরচ করে পঞ্চাশ ডলার, কিন্তু বকশিসের জন্য খরচ করে পাঁচহাজার সাতশো
পঞ্চাশ ডলার। এধরনের লোককে বোকা বানানো তো বা হাতের খেলা।
পিটসবার্গে
দিনচারেক কাটানোর পর অ্যাণ্ডি একরাতে বেশ উত্তেজিত ভাবে হোটেলে আমার ঘরে এলো। একজন আয়েল কিংকে পাকড়াও করেছে সে। লোকটা টাকার কুমীর, কিন্তু
বেশ দিলখোলা। এতকাল শুধু টাকাই কামিয়েছে, এখন বাড়ীতে অধ্যাপকের
কাছে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি
বিষয়ে নিয়মিত পাঠ নিচ্ছে।
ভদ্রলোক
প্রথম দর্শনেই নাকি অ্যাণ্ডিকে খুব পছন্দ করে ফেলেছেন। ওকে সঙ্গে করে নিজের বাড়ীতে
নিয়ে গিয়েছিলেন। তার সংগ্রহ চল্লিশ হাজার ডলার মূল্যের ছবির সংগ্রহ আছে। আর একটি
ঘরে কিউরিও আছে, তা ও প্রায় কুড়িহাজার, পঁয়তাল্লিশ বছর
বয়স, পিয়ানো বাজানো শিখতে শুরু করেছে, প্রতিদিন তার তেলের কুয়ো থেকে প্রায় পনেরো হাজার ব্যারেল তেল ওঠে।
আমি
অধৈর্য্য হয়ে অ্যাণ্ডিকে বাধা দিলাম—সব বুঝলাম, কিন্তু
তেল বা অ্যান্টিক নিয়ে আমরা কি করবো?
—স্কাডার আমাকে
একটা খোদাই করা সুন্দর মূর্তি দেখালো। একজন ইজিপশিয়ান
ভাস্কর,
তার নাম কারা, প্রায় দুহাজার বছর আগে তৃতীয় রামেসিস
এর জন্যে তৈরী করেছিল। একটা পদ্মফুলের মধ্যে একটি মেয়ের মুখ। এরকম দুটো ছিল বলে জানা
গেছে, কিন্তু আর একটার কোনও হদিশ নেই। এটা স্কাডার দু'হাজার ডলার দিয়ে কিনেছে।
--কি যে আবোল তাবোল বকছো, আমরা কি কোটিপতিদের কাছ থেকে
শিল্পচর্চার পাঠ নিতে এসেছি নাকি?
-দেখোই না কি হয়। একথা বলে তো
আণ্ডি নিজের ঘরে চলে গেল। পরের দিন সারা সকাল তার টিকির দেখা নেই। দুপুরের দিকে এসে
দেখালো ঠিক যেমনটি স্কাডারের কাছে দেখেছিল, ঠিক তেমনই একটি অনুপম ভাস্কর্য।
সারা সকাল বন্ধকী জিনিষের দোকান ঘুরে ঘুরে এক দোকানের জঙ্গলের স্তুপ থেকে এটা উদ্ধার
করেছে সে, আর কিনেও নিয়েছে পঁচিশ ডলার দিয়ে।
অ্যাণ্ডির
ধারনা এটা স্কাডারের মূর্তিটারই জুড়ি। ওটা নিশ্চয়ই স্কাডারের কাছে দুহাজার ডলারে বিক্রী
করা যাবে।
--তা যেতে পারে। কিন্তু কি করে আমরা ওটা ওকে কেনাবো। ওটা যে আসল জিনিষ বোঝাবো কি করে।
অ্যাণ্ডির
প্ল্যান তৈরীই ছিল। আমি একটা নীল চশমা পরে নিলাম, চুলটা এলো মেলো করে নিয়ে
প্রফেসার পিকলম্যান বনে গেলাম। অন্য একটা হোটেলে উঠে গিয়ে স্কাডারকে এইমর্মে একটা
তার (টেলিগ্রাম) করে দিলাম যে জরুরী একটা কাজে সে যেন অবশ্যই আমার সঙ্গে দেখা করে।
আধঘন্টার
মধ্যেই স্কাডার এসে উপস্থিত। তাকে বললাম, আমি হাতির দাঁতের একটি মূর্তি
কিনেছি। শুনেছি ওটা তৃতীয় রামেশিসের আমলে এক ভাস্কর একটা পদ্মফুলের মধ্যে ১ রাণী আইসিসের
মূর্তি খোদাই করেছিল। আমি ওটা বন্ধকী -----না মানে ভিয়েনার একটা অখ্যাত যাদুঘর থেকে
পেয়েছি। তা, শুনলাম ওর জুড়ি মূর্তিটা নাকি তোমার কাছে আছে,
আমি ওটা কিনতে চাই। তোমার দাম বলো।
-কি বলছে প্রফেসার। কর্ণেলিয়াস স্কাডার যে জিনিষ নিজে রাখতে চায়, সে জিনিষ বিক্রি করবে? তোমার মূর্তিটা কি তোমার কাছে
আছে? আমি একটু দেখতে পারি।
মূর্তিটা
বার করে দিলাম। স্কাডার খুব আগ্রহের সঙ্গে সেটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। তার চোখ উজ্জল হয়ে উঠলো।
--আরে, ঠিকই তো, এর জুড়িটাই তো আমার
কাছে আছে, কিন্তু আমি তো সেটা বেচবো না, তুমি কি দয়া করে তোমারটা আমার কাছে বেচবে? এ জিনিষটা
আমি কতদিন ধরে কত জায়গায় খুঁজেছি। বেচবে আমাকে, আড়াই হাজার ডলার
দেবো তোমাকে।
-ঠিক আছে। তুমি যখন বিক্রী করবে না, তখন আমরটাই নাও । বড় নোটে নগদ দাও টাকাটা। আজই আমায় নিউইয়র্ক যেতে হবে। ওখানকার
অ্যাকুইরিয়ামে একটা বক্তৃতা আছে আমার।
স্কাডার
তখনই একটা চেক কেটে দিল এবং হোটেল থেকেই সেটা ভাঙিয়ে টাকাটা আমার হাতে এসে গেল। আমি
প্ল্যানমতো অ্যাণ্ডির হোটেলে দ্রুত ফিরে দেখি অ্যাণ্ডি অস্থির হয়ে পায়চারী করছে।
-পাঁচিশশো ডলার পেয়েছি অ্যাণ্ডি। নগদ।
–পশ্চিমে যাবার
গাড়ী ছাড়তে আর মাত্র এগারো মিনিট বাকি। শিল্পীর তোমার মালপত্র নিয়ে এসো। এতো তাড়া কিসের আণ্ডি। মূর্তিটা যদি আসল না-ও হয়,
বুঝতে ওর কিছুটা সময় তো লাগবেই। ও তো ওটাকে আসল বলেই ধরে নিয়েছে দেখলাম।
—ওটা আসলই। কাল
যখন ওর কিউরিওগুলো দেখছিলাম, ও অল্প সময়ের জন্য ঘরের বাইরে গিয়েছিল।
সেই সুযোগে আমি ওর মূর্তিটাই তুলে এনেছিলাম। সেটাই তুমি এইমাত্র ওকে পঁচিশশো ডলারে
বেচে এলে, বুঝেছো?
-তবে আমাকে বন্ধকী দোকানের গল্পটা শোনানোর কি দরকার ছিল?
-ওঃ ওটা তো তোমার বিবেককে সান্ত্বনা দেবার জন্য। চলো, চলো, বেরিয়ে পড়ি।
Conscience
of Art
৩৮) চোর-পুরুষ
বা নারী যেই হোক না কেন, উভয়ের
হাত কেটে দাও৷ এটা তাদের কর্মফল এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ৷ আল্লাহর শক্তি সবার ওপর বিজয়ী এবং তিনি জ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ। (সুরা
মায়েদাহ ৩৮)
No comments:
Post a Comment