মজার গল্প, উপন্যাস, গোয়েন্দা কাহিনী, ছোট গল্প, শিক্ষামূলক ঘটনা, মজার মজার কৌতুক, অনুবাদ গল্প, বই রিভিউ, বই ডাউনলোড, দুঃসাহসিক অভিযান, অতিপ্রাকৃত ঘটনা, রুপকথা, মিনি গল্প, রহস্য গল্প, লোমহর্ষক গল্প, লোককাহিনী, উপকথা, স্মৃতিকথা, রম্য গল্প, জীবনের গল্প, শিকারের গল্প, ঐতিহাসিক গল্প, অনুপ্রেরণামূলক গল্প, কাহিনী সংক্ষেপ।

Total Pageviews

Tuesday, June 18, 2019

শুধুই ফেনা - আর কিছু না - হার্নান্দো তেলেজ - বাংলা অনুবাদ - Just Lather, That's All - HERNANDO TÉLLEZ - Bangla Translation -



Just Lather, That's All - HERNANDO TÉLLEZ - Bangla Translation

Just Lather, That's All - HERNANDO TÉLLEZ - Bangla Translation - বাংলা অনুবাদ

ভেতরে প্রবেশের সময় কিছুই বলেনি লোকটা। আমি তখন আমার সবচেয়ে ভাল ক্ষুরটা একটা চামাটিতে সামনে পিছনে ঘষছিলাম। কিন্তু লোকটাকে চিনতে পারা মাত্র কাপতে শুরু করলাম। তবে ব্যাপারটা সে লক্ষ করল না! ভীতিটা আড়াল করার জন্যে ক্ষুরে শান দিয়ে গেলাম।
আঙ্গুলের মাংসে ঘষে পরখখ করে দেখলাম সেটা। ঠিক তখনি লোকটা তার বুলেট খচিত বেল্টটা খুলে ফেলল। তার পিস্তলের হোলস্টারটা ঝুলছে বেল্টে। দেয়ালের হুকে সেটা ঝুলিয়ে তার ওপর সামরিক টুপিটা চাপা দিল। টাই-এর গেরোটা ঢিলে করে দিয়ে ঘুরে দাড়াল আমার দিকে। বলল, 'নরকের মত গরম পড়েছে। দাড়িটা কেটে দাও তো।' তারপর বসে পড়ল চেয়ারে
আন্দাজ করলাম, দিন চারেক দাড়ি কামায়নি লোকটা-সর্বশেষ অভিযানে আমাদের সৈন্যদের খুঁজতে ব্যয় হয়েছে তার এই চারদিন। রোদ্দুরে পুড়ে মুখটা লাল হয়ে উঠেছে। সাবধানে সাবান ঠিক করতে লেগে গেলাম আমি। কয়েক ফালি কেটে কাপের মধ্যে ফেললাম। খানিকটা গরম পানি মেশালাম।- তারপর ব্রাশ দিয়ে নাড়তে লাগলাম। সঙ্গে সঙ্গে ফেনা উঠতে শুরু করল। দলের বাকি সবার দাড়িও এরকম বড় হয়ে গেছে,  মন্তব্য করল লোকটা। আমি তখনও সাবানের ফেনা নেড়ে চলেছি।
কিন্তু, বুঝলে, কাজের কাজ করেছি আমরা। পালের গোদাগুলোকে পাকড়াও করেছি। কয়েকটাকে মেরে নিয়ে এসেছি। বাকিগুলো জ্যান্ত আছে এখনও। তবে শিগগিরই সব ক'টা যমের বাড়ি যাচ্ছে
কজনকে ধরেছিলেন?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম।
চোদ্দ। জঙ্গলের ভেতর অনেক দূর যেতে হয়েছে ওদের ধরার জন্যে। বাকিদেরও বাগে পাব একজনকেও জ্যান্ত ছাড়ব না, একজনকেও না।
আমার হাতে সাবানের ফেনা মাখানো ব্রাশ দেখতে পেয়ে চেয়ারের পিঠে পিঠ ঠেস দিয়েবসল সে। অবশ্য এখনও চাদর চাপানো হয়নি তার গায়ে। সত্যি ভীষণ খারাপ লাগছে আমার। দেরাজ থেকে একটা চাদর বের করে লোকটার গলায় পেঁচিয়ে দিলাম। সে বকেই-চলেছে। খুব সম্ভব লোকটা ভাবছে আমি তার দলের প্রতি সহানুভূতিশীল।
আমরা যা করলাম, এরপর এই শহরের লোকদের একটা শিক্ষা হওয়া উচিত, মন্তব্য করল সে।
তা ঠিক,’ লোকটা কালো, ঘর্মাক্ত গলায় গেরো দিতে দিতে সায় দিলাম আমি।
জবর খেল দেখিয়েছি, তাই না?’ -
দারুণ,’ ব্রাশের জন্যে ঘুরে দাড়িয়ে জবাব দিই আমি। ফেনার শীতল স্পর্শের অপেক্ষায় ক্লান্ত ভঙ্গিতে দুচোখ বন্ধ করল লোকটা। এত কাছে লোকটাকে আগে পাইনি কখনও। স্কুলের আঙিনায় ফাঁসিতে লটকানো চার বিপ্লবীকে দেখার জন্যে লোকটা যেদিন শহরের সবাইকে সেখানে যেতে হুকুম দিয়েছিল, সেদিন মুহূর্তের জন্যে লোকটার সামনাসামনি হয়েছিলাম আমি। কিন্তু যে মুখটা আমি কিছুক্ষণের মধ্যে হাতে নিতে যাচ্ছি সেই মুখটার দিকে ভাল করে নজর দেয়া হয়নি সেদিন। কারণ চার বিপ্লবীর ক্ষত-বিক্ষত দেহ-ই সেদিন আমার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল। মুখটা দেখতে খারাপ নয় লোকটার। আর তাছাড়া, বয়স বাড়িয়ে দেয়া দাড়িটায় তাকে নেহাত মন্দ লাগছে না। লোকটার নাম টরেস-ক্যাপ্টেন টরেস। ভালো কল্পনা-শক্তি আছে লোকটার, নইলে  বিপ্লবীদের নগ্নদেহগুলো ফাসিতে ঝুলিয়ে তাদের ওপর টার্গেট প্র্যাকটিস করার কথা মাথায় আসে নাকি কারও?
সাবানের প্রথম প্রলেপ লাগাতে শুরু করলাম আমি। ওদিকে চোখ বুজেই বলে চলেছে লোকটা, কোন কসরত না করেই দিব্যি ঘুমিয়ে পড়তে পারি আমি এখন। কিন্তু না, বিকেলে মেলা কাজ রয়েছে।
সাবানের ফেনা মাখানো থামিয়ে চেষ্টাকৃত নির্লিপ্ত গলায় শুধোলাম, ফায়ারিং স্কোয়াড?
অনেকটা সেরকমই, তবে ব্যাপারটা তার চেয়ে কিছুটা ঢিল
ফের তার দাড়িতে সাবান মাখাতে লাগলাম আমি। আবার কাঁপতে শুরু করেছে আমার হাত। সম্ভবত লোকটা সেটা বুঝতে পারছে না, এবং তাতে আমার সুবিধেই হলো। কিন্তু লোকটা না এলেই বরং খুশি হতাম আমি। আমাদের বিরোধী দলের অনেকেই সন্তবত তাকে ভেতরে ঢুকতে দেখেছে। আর কারও বাড়িতে শত্রু এসে ঢোকার অর্থই হচ্ছে কিছু বাধ্যবাধকতা।
অন্য যে কারোর মত এ লোকটার দাড়িও খুশি মনেই কামাবো আমি, সাবধানে, আলতো হাতে। অন্য যে কোন খদ্দের-এর মতই, যত্ন নিয়ে, যাতে করে একটা লোমকুপ থেকেও এক ফোটা রক্ত বের না হয়। খোচা খোঁচা দাড়িগুলো যাতে ব্লেডটাকে উল্টো-সিধে কোনদিকে না নিয়ে যায় সেদিকে খেয়াল করে। দাড়ি কামানো শেষে তার মুখের ত্বক যেন মসৃণ, কোমল এবং সতেজ থাকে যাতে গালে হাতের উল্টো পিঠ বুলালে কোন দাড়ির খোঁচা না লাগে সে ব্যাপারটা লক্ষ রেখে। হ্যা, একথা ঠিক যে, মনে মনে আমিও একজন বিপ্লবী, কিন্তু অন্যদিকে আমি কর্তব্যসচেতন এক নাপিতও। আমার এ পেশায় যে নিখুঁত কর্মদক্ষতার প্রয়োজন হয় সে জন্যে আমার মনে খানিকটা গর্বও আছে।
ক্ষুরটা তুলে নিলাম। নিরাপত্তামূলক দুই বাহু উন্মুক্ত করে এক পাশের জুলফির নিচ থেকে কাজ শুরু করলাম। চমৎকার কাজ করছে ক্ষুরটা। লোকটার দাড়ি অনমনীয় এবং শক্ত; তেমন বড় নয়, তবে ঘন। একটু একটু করে ত্বক বেরিয়ে আসছে। ছোট ছোট দাড়ি মেশানো ফেনার তালগোল পাকানো পিণ্ড ব্লেডের ধার ঘেষে জমা হবার স্বাভাবিক শব্দ তুলে ক্ষুর কাজ করে যাচ্ছে।
ফেনার দলা পরিষ্কার করার জন্যে থামলাম। ব্লেডটায় ধার দেবার জন্যে চামাটি-টা তুলে নিলাম আবার, নাপিত হিসেবে আমার কাজে কোন গলতি নেই। এতক্ষণ চোখ বুজে ছিল লোকটা। এবার খুলল। চাদরের তলা থেকে একটা হাত বের করে মুখের সাবানমুক্ত অংশে বুলিয়ে বলল, আজ ছটায় স্কুলে এসো।
সেদিনের মত কিছু নাকি? আতকে উঠে জিজ্ঞেস করলাম।
তার চেয়েও ভাল হতে পারে, সে জবাব দিল।
- এবার কী করবেন বলে ঠিক করেছেন?
এখনও ঠিক জানি না। তবে নিজেরা একটু মজা করব।আবার চেয়ারের পিঠে হেলান দিয়ে চোখ বুজল লোকটা। উদ্যত ক্ষু হাতে এগিয়ে গেলাম আমি।
সবাইকে শাস্তি দেবেন বুঝি? ভীরু কণ্ঠে প্রশ্ন করলাম।
মুখের সাবান শুকিয়ে আসছে লোকটার। তাড়াতাড়ি কাজ সারতে হবে। আয়নার ভেতর দিয়ে রাস্তার দিকে তাকালাম। সেই চিরাচরিত দুতিনজন খদ্দেরসহ মুদির দোকান। ঘড়ির দিকে তাকালাম-দুপুর দুটো বেজে কুড়ি মিনিট।
ক্ষুরের নিচমুখী টান শুরু হয়েছে আবার।বার অবশ্য অন্য জুলফির নিচ থেকে। নিবিড়, নীল দাড়ি। কোন কোন কবি বা পাদ্রী মত এ লোকটারও দাড়ি রেখে দেয়া উচিত ছিল। মানাত খুব। অনেকেই তাহলে চিনতে পারত না তাকে। তাতে তার লাভই হত, গলার অংশটায় মসৃণ ভাবে ক্ষুর চালাতে চালাতে ভাবছি আমি। হুম, খুব নিপুণভাবে ক্ষুর না চালালেই নয় এখানটায়। কারণ, তুলনামূলকভাবে নরম হলেও দাড়ি একটু পাক খেয়েছে এ জায়গায়। কোঁকড়া দাড়ি। হঠাৎ করেই ক্ষুদ্র কোন লোমকুপের ভেতর থেকে মুক্তোর মত রক্তের ফোটা বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু কোন খদ্দের-এর বেলাতেই সেটা ঘটতে না দেয়ার মধ্যেই তো ভাল নাপিতের কৃতিত্ব।
আমাদের কজন লোকটার হুকুমে গুলি খেয়ে মরেছে? আমাদের কজনের অঙ্গহানি ঘটেছে লোকটার আদেশে? বিষয়টা নিয়ে না ভাবাই ভাল। টরেস জানে না যে আমি তার শত্রু। সে যেমন জানে না, তেমনি. বাকিরাও জানে না। টরে শহরে কী করছে না করছে, বা বিপ্লবী নিধন অভিযান চালাবার জন্যে প্রতিবার সে কী ফন্দি আটছে সে খবর আমি যাতে নির্বিঘ্নে বিপ্লবীদের কাছে পৌছে দিতে পারি একমাত্র সেই উদ্দেশ্যেই এই গোপন কথাটা খুব অল্প কজন ছাড়া কাউকে জানতে দেয়া হয়নি।
আর সে কারণেই, হাতের মুঠোয় পেয়েও তাকে যে আমি দিব্যি জ্যান্ত এবং দাড়ি কামানো অবস্থায় ছেড়ে দিচ্ছি-এ ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। দাড়ি এখন আর নেই বললেই চলে।
আগের চেয়ে তরুন দেখাচ্ছে এখন লোকটাকে। প্রথম যখন ঢুকেছিল তখনকার চেয়ে বয়সের ভার বেশ নেমে গেছে বলে মনে হলো। আমার ধারণা, যারা নাপিতের দোকানে যায় তাদের সবার বেলাতেই এমনটা ঘটে। আমার ক্ষুরের টানে টরেস তার যৌবন ফিরে পাচ্ছে- পাচ্ছে তার কারণ, নাপিত হিসেবে আমি নেহাত মন্দ নই; বলা যেতে পারে শহরের সেরা। কী গরমই না পড়েছে! টরেস নিশ্চয়ই আমার মতই ঘামছে বসে বসে কিন্তু লোকটা বড্ড ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। বিকেলে, একটু পরেই বন্দীদেরকে নিয়ে কী করবে সে কথা একটু ভাবছে না পর্যন্ত। অথচ আমি এই চামড়ার ওগর বার বার ক্ষুর চালাতে চালাতে ঠিকমত কিছু চিন্তাই করতে পারছিনা।
কেন যে এল লোকটা, যত্তসব! আমি একজন বিপ্লবী, খুনী নই। অথচ লোকটাকে খুন করা কী সহজ। এটা তার প্রাপ্য। তাই কি? না! কী সাংঘাতিক! খুন হওয়াটা কারও প্রাপ্য হতে পারে না। কী লাভ তাতে? কিচ্ছু না! অন্য লোকজনের আবির্ভাব ঘটে, তারপরেও -আরও অনেকে আসে। আগের লোকেরা পরের লোকদেরকে হত্যা করে, পরের লোকেরা খুন করে তারপরে লোকজনকে- এভাবেই চলতে থাকে, রক্তের দরিয়া তৈরি না হওয়া পর্যন্ত।
ঘ্যাচ! ঘ্যাচ!-দুই পোচে লোকটার গলা কেটে ফেলতে পারি আমি। বাধা দেবারও সময় পাবে না সে। আর তাছাড়া যেহেতু সে চোখ বুজে রয়েছে তাই চকচকে ব্লেডটা বা আমার চকচকে চোখ দুটো সে দেখতেই পাবে না। আমি কিন্তু রীতিমত কাপছি আসল খুনীদের মতই। লোকটার গলা থেকে এক ঝলক রক্ত ছিটকে বের হয়ে চাদরে, চেয়ারে, আমার হাতে, মেঝেতে ছড়িয়ে পড়বে।-দরজাটা বন্ধ করে দিতে হবে আমাকে। মেঝের ওপর দিয়ে রক্ত গড়িয়ে যেতে থাকবে-উষ্ণ, অবিনাশী, অপ্রতিরোধ্য সেই রক্ত শেষ পর্যন্ত একটা রক্তিম জলস্রোতের মত রাস্তায় গিয়ে নামবে।
আমি নিশ্চিত, জুতসই একটা টান দেয়া গেলে, গভীর করে চিরে ফেলা গেলে, কোন ব্যথা লাগবে না। একবিদন্দু কষ্ট পাবে না লোকটা। কিন্তু লাশটার কী গতি করব আমি? লুকোব কোথায় ওটা? সব কিছু পেছনে ফেলে রেখে আমাকে পালিয়ে যেতে হবে, তারপর কোথাও গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে। কিন্তু আমাকে খুঁজে বের না করা পর্যন্ত আমার পিছু ছাড়বে না ওরা। ক্যাপ্টেন টরেসের খুনী। তার দাড়ি কামানোর সময় লোকটা খুন করেছে তাকে-কাপুরুষ একটা
আবার অন্যদিকে, (বিপ্লবীরা বলবে) ‘আমাদের সবার হয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে সে। মনে রাখার মত একটি নাম শহরের নাপিত ছিল। কেউ জানত না যে সে আমাদের পক্ষেই লড়াই করেছিল।
খুনী, না বীর?
এই ব্লেডের প্রান্তে ভর করে আছে আমার নিয়তি হাতটা আমার আরেকটু ঘুরিয়ে দিতে পারি, একটু বেশি জোর দিয়ে চেপে ধরতে পারি ক্ষুরটা, দাবিয়ে দিতে পারি ভেতরে। সিল্কের মত, রাবারের মত পথ করে দেবে ত্বক। মানুষের ত্বকের মত এত কোমল আর কিছু নেই। তাছাড়া, বেরিয়ে আসার জন্যে রক্ত সবসময় মুখিয়েই থাকে তার নিচে কিন্তু আমি খুনী হতে চাই না। তুমি আমার কাছে দাড়ি কামাতে এসেছ। আর আমি আমার কাজ করি সততার সঙ্গে, মর্যাদার সঙ্গে।---আমি চাইনা আমার হাতে রক্ত লাগুক। স্রেফ সাবানের ফেনা, তাই যথেষ্ট।
তুমি লোকটা জল্লাদ, কিন্তু আমি কেবল একজন নাপিত। দুনিয়ায় সবারই যার যার নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। লোকটার চিবুক এখন পরিষ্কার আর মসৃণ। সোজা হয়ে বসে আমার দিকে তাকাল সে। তরতাজা, নতুনের মত গালে হাত বুলাল।
ধন্যবাদ, বলে দাড়াল সেতারপর এগিয়ে গেল হ্যাঙ্গার-এর দিকে, বেল্ট, পিস্তল আর টুপি নেবার জন্যে। আমাকে নিশ্চয়ই খুব পাণ্ডুর দেখাচ্ছে। শার্টটা ভিজে ভিজে ঠেকছে। বগসটা ঠিকমত এঁটে নিল টরেস। পিস্তলটা সোজা করে রাখল হোলস্টারে। তারপর চুলটা পরিপাটি করে নিয়ে টুপিটা মাথায় চাপাল। প্যান্টের পকেট থেকে পয়সা বের করে আমার পাওনা মিটিয়ে দিয়ে দরজার দিকে এগোল।
দরজার মুখে যেয়ে থেমে দাড়াল সেঘুরে দাড়িয়ে বলে উঠল, ওরা বলেছিল, তুমি নাকি খুন করবে আমাকে। করও কি না সেটা পরখ করার জন্যেই এসেছিলাম আজ। কিন্তু একটা কথা তুমি শুনে রাখো আমার কাছ থেকে, খুন করাটা অত সহজ কাজ নয়।
কথা শেষ করে আবার ঘুরে দাড়িয়ে বের হয়ে গেল সে।

লেখক পরিচিতঃ
হেরনাণ্ডো টেলেজ (Hernando_Téllez - ১৯০৮-১৯৬৬) কলম্বিয়ার এই প্রবন্ধকার এবং ছোট গল্প লেখকের জন্ম বোগোটায়কলম্বিয়ার বেশ কিছু সেরা খবরের কাগজ এবং সাময়িক পত্রিকায় কাজ করেছেন বিদগ্ধ লেখক টেলেজ ন্সাল হিসেবে মার্সেই-এ এবং সিনেটর হিসেবে স্বদেশে কর্তব্য পালন করেছেন। চল্লিশোর্ধ বয়সে প্রকাশিত তার ছোট গল্প সংকলন অ্যাশেজ ফর দ্য উইণ্ড অ্যান্ড আদার টেলস(১৯৫০)-এর কারণেই মূলত সাহিত্য খ্যাতি লাভ করেন তিনি। বিভিন্ন বিষয় বস্তুর ওপর লেখা তার কিছু প্রবন্ধের কারণেও তিনি সমাদর লাভ করেন।
স্বদেশে তিনি এই ছোট গল্পটির কারণেই বিশেষ করে বিখ্যাত। কিছুই ঘটে না গল্পটিতে, কিন্তু তারপরেও ঘনিয়ে ওঠে উত্তেজনা, উৎকণ্ঠা। দারুণ কিছু শব্দের কৌশলী প্রয়োগে চরিত্র দুটির মধ্যেকারই ওধু নয়। শহরের ভেতরে বিদ্যমান সংঘাতটি পরিষ্কার হয়ে ফুটে ওঠে আমাদের সামনে।

No comments:

Post a Comment

Popular Posts