মজার গল্প, উপন্যাস, গোয়েন্দা কাহিনী, ছোট গল্প, শিক্ষামূলক ঘটনা, মজার মজার কৌতুক, অনুবাদ গল্প, বই রিভিউ, বই ডাউনলোড, দুঃসাহসিক অভিযান, অতিপ্রাকৃত ঘটনা, রুপকথা, মিনি গল্প, রহস্য গল্প, লোমহর্ষক গল্প, লোককাহিনী, উপকথা, স্মৃতিকথা, রম্য গল্প, জীবনের গল্প, শিকারের গল্প, ঐতিহাসিক গল্প, অনুপ্রেরণামূলক গল্প, কাহিনী সংক্ষেপ।

Total Pageviews

Sunday, April 19, 2020

শিক্ষামূলক ঘটনা - বন্দী সুমামা (রাঃ) এর ইসলাম গ্রহণ

শিক্ষামূলক ঘটনা - বন্দী সুমামা (রাঃ) এর ইসলাম গ্রহণ

শিক্ষামূলক ঘটনা - বন্দী সুমামা (রাঃ) এর ইসলাম গ্রহণ
মহানবী (সা) জীবনে বহু দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছেন। কাফেররা তাঁর ওপর অনেক অত্যাচার চালায়। তাঁকে পাথর মেরে রক্তাক্ত করেছে তায়েফের কাফের-মুশরেকরা। নবীজী তাদের ওপর কোনোই প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। কাফেররা তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে টানা হেঁচড়া করেছে। তারও তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি। তাঁর মাথা ফাটানো হলো, শরীর ঝাঁঝরা করা হলো। তবুও তিনি কটু কথা বলেননি। বরং তিনি সবাইকে মাফ করে দিয়েছেন, ক্ষমা করেছেন। ক্ষমার এমন অনন্য নজির কল্পনাই করা যায় না।
বনু হানিফা গোত্রের এক ঘটনা। এই গোত্রের লোকেরা ছিল কুচক্রী ও দাগি অপরাধী। নানান খারাপ কাজে এদের জুড়ি ছিল না। এই গোত্রে ছিল ইসলাম বিদ্বেষী ও খুনি এক সর্দার। নাম তার সুমামা ইবনুল আদাল। বহু খুনের ঘটনায় সে তার হাত রঞ্জিত করেছিল। অসংখ্য মুসলমানের সর্বনাশ করেছে সুমামা। এখন সে মুসলমানদের হাতে বন্দী। সবাই তাকে হত্যা করার জন্য দাবি তুলল। সকলে বলল, সুমামার মৃত্যুদণ্ড চাই। কারণ, সে ইসলামের বড় শত্রু।
বন্দীকে শেষমেশ এনে হাজির করা হলো মহানবী (সা)-এর কাছে। তিনি বন্দীর দিকে চোখ তুলে তাকালেন। তারপর বললেন, তোমার কি কিছু বলার আছে?
সুমামা জবাব দিল, আমি বড় দুশমন, একজন দাগি অপরাধী। আমার অপরাধের জন্য আমাকে হত্যা করতে পারেন। আর যদি মাফ করে দেন তা হলে আমি কৃতজ্ঞ হব। তা না করে মুক্তিপণ চাইলে বলুন, কত দিতে হবে? আমি তা দিতে রার্জি আছি।
সুমামার কথা শুনে নবীজী চুপ করে রইলেন। বন্দীকে কোনো কিছুই বললেন না। বরং নবী (সা) সেখান থেকে উঠে চলে গেলেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনও মুহাম্মদ (সা) সুমামাকে একই প্রশ্ন করলেন। আর বন্দীও একই জবাব দিল।
নবীজী তাকে যে কঠিন শাস্তি দেবেন-এটা সুমামার বুঝতে বাকি রইল না। সুমামা এখন ভাবছে মৃত্যুদণ্ডই হয়তো তার প্রাপ্য শাস্তি হবে। আর এই শাস্তির জন্য সে নিজেকে তৈরি করে নিল। এভাবে কেটে গেল কিছুদিন। একদিন মহানবী (সা) হঠাৎ একজন সাহাবীকে কাছে ডেকে আনলেন। তিনি সুমামার বাঁধন খুলে দিয়ে তাকে মুক্ত করে দিতে আদেশ দিলেন। সাহাবী আর কী করবেন? তিনি সে আদেশ পালন করলেন। বন্দী মুক্ত হয়ে সুমামা তো হতবাক! এই যে মুক্তি তা ছিল তার কল্পনারও বাইরে। এমন অপরাধের পর কেউ মাফ পেতে পারে না! এটা হতেই পারে না! অথচ বাস্তবে তাই ঘটেছে দেখে বিস্ময়ে সুমামা যেন পাথর হয়ে গেল। মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফেরার জন্য সামনে এগিয়ে চলল সুমামা। কিন্তু তার পা যেন বারবার আটকে যাচ্ছিল। সুমামা ভাবল, এমন বড় মাপের মানুষকে ছেড়ে যাওয়া যায় না। আজ সে ঠিকই আঁচ করতে পারল যে, মুহাম্মদ (সা) সত্যিই সেরা মানুষ। তাঁর সান্নিধ্য পাওয়াও যে অনেক বড় সৌভাগ্য। তাই সুমামা থমকে দাঁড়াল। নবী (সা)-এর সান্নিধ্য পেতে সে উদগ্রীব হয়ে উঠল। অনেক ভেবে-চিন্তে একটা কূপ থেকে গোসল সেরে পুনরায় ফিরে এলো সুমামা। নবীজীর কাছে এসে ইসলাম কবুলের জন্য আগ্রহ দেখাল।
মহানবী (সা) সুমামাকে কালেমা পড়িয়ে মুসলমান করে নিলেন। শত্রু সুমামার জীবন পালটে গেল। ইসলাম গ্রহণ করে সোনার মানুষে পরিণত হলো সুমামা। মহানবী (সা) ক্ষমার মহিমা দিয়ে একজন শত্রুকে সোনার মানুষে পরিণত করলেন।

No comments:

Post a Comment

Popular Posts