নানার মৃত্যু - ছোট গল্প - হাসির গল্প - মজার গল্প |
নানার
মৃত্যু
- ছোট গল্প - হাসির গল্প - রম্য গল্প - মজার গল্প
এক
লোক একটি সরকারি অফিসে চাকরি করে। লোকটি এমনিতে খারাপ না। মিথ্যা কথা দু'একটা যে না বলে তা না। তবে মিথ্যাবাদী
বলে তার কোনো বদনাম নাই। তবু একটা বিষয়ে তার সম্পর্কে অফিসের সকলেরই বেশ খটকা লাগে।
বিষয়টা হলো অফিস থেকে তার ছুটি নেওয়া। সে এমনিতেই অফিস থেকে বেশ ছুটিছাটা কাটায়।
তবে একটা ছুটি নিয়ে অফিসের লোকেরা একটু গুঞ্জন তোলে বা মুখ
চাওয়াচাওয়ি করে।
বছর
তিনেক আগে লোকটি একদিন অফিসের বড় সাহেবের কাছে নানা মারা গেছে বলে ছুটি নেয়। তখন
সে বিষয় নিয়ে কারো মনে তেমন কোনো প্রশ্ন জাগেনি। সবাই ব্যাপারটিকে এক সাধারণ
ঘটনা হিসাবে মেনে নেয়। কিন্তু তিন বছর পর আবার যখন সে নানার মৃত্যুর জন্য বড় সাহেবের
কাছে ছুটি চায় তখনও তিনি ছুটি মঞ্জুর করেন। কারণ তিন বছর আগের ঘটনা তার মনে ছিলো না।
তবে লোকটির সঙ্গে এক কক্ষে বসে যারা কাজ করেন তাদের কেউ কেউ ঘটনাটি বিস্মৃত হয়েছে।
কারণ নানার সঙ্গে সম্পর্কের কিছু দূরত্বের জন্য এবং নানা মানেই বুড়ো মানুষ, মৃত্যু
তার জন্য অস্বাভাবিক কোনো ব্যাপার না—সে জন্য।
তবে
যে দু'একজন ঘটনাটি মনে রেখেছিলেন, তাদের একটু খটকা লাগে। যাহোক,
বছরখানেক পরে লোকটি আবার বড় সাহেবের কাছে নানার মৃত্যুর জন্য ছুটি
চায়। এবার কিন্তু বড় সাহেবের মনেও খটকা লাগে। আর অন্যরা মুচকে মুচকে হেসে ভাবে ভাইজানকে
ভালো মানুষ বলে জানতাম এখন দেখি ধড়িবাজ।
যাহোক, বড়
সাহেব দরখাস্ত হাতে নিয়ে লোকটির মুখের দিকে তাকান এবং তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলেনঃ নানা কতবার
মরেন— গত বছরই না একবার মরলেন!
লোকটি : জ্বি
স্যার, ঠিকই বলেছেন। গত বছর মরেছিলেন। এ বছরও মরলেন। স্যার আপনার
মনে নেই— তিন বছর আগেও মরেছেন।
বড়
সাহেব লোকটির কথা শুনে থ। ভাবেন : বলে নিক লোকটি। এক মানুষ তিনবার মরে কেমন
করে?
লোকটি : স্যার
আমি মিথ্যাবদী ধান্দাবাজ প্রতারক না। আসলেই আমার নানা মরেছে, এক বছর আগেও মরেছে এবং তিন বছর আগেও মরেছিল। সবই সত্য। এতে কোনো রহস্য বা ছলচাতুরী নেই।
বড়
সাহেব
: মানে? লোকটি : স্যার,
আসলে আমার নানিকে গাঁয়ের লোক বলে, ভাতার খাকি,
ভদ্রলোকেরা বলে অপয়া, কেউ কেউ বলে, সুন্দরী কিন্তু মৃত্যুর দূতী। লোকে তার সৌন্দর্যের জন্য পাগল হয়ে বিয়ে করে, আর
অল্পদিন পরেই মরে। এ পর্যন্ত তিন নানা মরল। আপন নানী, ফেলতে তো
পারি না!
No comments:
Post a Comment