মজার গল্প, উপন্যাস, গোয়েন্দা কাহিনী, ছোট গল্প, শিক্ষামূলক ঘটনা, মজার মজার কৌতুক, অনুবাদ গল্প, বই রিভিউ, বই ডাউনলোড, দুঃসাহসিক অভিযান, অতিপ্রাকৃত ঘটনা, রুপকথা, মিনি গল্প, রহস্য গল্প, লোমহর্ষক গল্প, লোককাহিনী, উপকথা, স্মৃতিকথা, রম্য গল্প, জীবনের গল্প, শিকারের গল্প, ঐতিহাসিক গল্প, অনুপ্রেরণামূলক গল্প, কাহিনী সংক্ষেপ।

Total Pageviews

Wednesday, August 19, 2020

টাকার গরম - মজার গল্প – হাসির গল্প – ছোট গল্প

টাকার গরম মজার গল্প  হাসির গল্প  ছোট গল্প
টাকার গরম - মজার গল্প হাসির গল্প ছোট গল্প


বাংলাদেশের এক নিভৃত গ্রাম। বাঁশঝাড়, ঝোপজঙ্গল, সরু পায়ে হাঁটা পথ আর তার পাশে সদ্য হয়ে যাওয়া বৃষ্টির পানি কচু পাতায় টলমল করতে থাকা সৌন্দর্য। সেই কচু গাছের নিচে বাস করে এক কুনি ব্যাঙ।
একদিনের কথা। সেই কচু গাছের নিচে বাস করা ব্যাঙটিকে পেট ফুলিয়ে, সবুজাভ চোখ কপালে তুলে বসে থাকতে দেখা গেল। মনে হল কুনি ব্যাঙটি ঠিক ক্রুদ্ধ নয়, তবে খুব সতর্কযেন চোখ-কান খাড়া রেখে শারীরিক শক্তির আভাস দিয়ে চারদিকে সাবধানী দৃষ্টি রাখছে।
এ হল কাকভোরের গল্প। তখন কচুপাতায় বৃষ্টির টলমল ফেঁটা, ঘাসে শিশিরের চুমকি, পাখিরা রাতের নীড় ছেড়ে উড়ে যাচ্ছে খাদ্যের সন্ধানে, কয়েকটা কাক পাশের ফাঁকা জায়গায় বসে তাদের দিনের কর্মসূচি নিয়ে যুক্তিতর্ক করছে। এমনকি ভিন্নমত পোষণকারীকে দুতিনজনে আক্রমণ করে শায়েস্তা করছে। চাষীরা হালের লাঙ্গল জোয়াল আর গরু নিয়ে হালট ধরে চলেছে।
এমনি সময়ে এক ঝুনা প্রবীণ ঘাটে (প্রাতঃকৃত্যকে গ্রামীণ মানুষ সুভাষণে ঘাটে যাওয়া বলে) থেকে ফিরে ওই সরু পথটি ধরে বাড়ি ফিরছিল। ব্যাঙের আস্তানার কাছে আসতেই কুনি ব্যাঙটি লাফ দিয়ে এমন করে তার গা ঘেঁষে পড়ল যে, মনে হল এই ভঙ্গিটা পেট ফোলানো, চোখ গোল করা সতর্কতা নয়। রীতিমত ক্রুদ্ধতার বহিঃপ্রকাশপ্রসূত একটা আক্রমণাত্মক শৈলী।
বহুদর্শী প্রবীণ মজা পান, কৌতুক অনুভব করেন এবং শেষে মনে মনে ব্যাপারটার ব্যাখ্যা করতে যেয়ে তার ধারণা হয়ঃ না তো, এ শুধুই একটা সাধারণ ব্যাপার নয়। এর পিছনে নিশ্চয় কোন কারণ আছে। তাই সে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।
তখন রাস্তায় মানুষ চলাচল শুরু হয়েছে। ব্যাঙের আস্তানার পাশ দিয়ে লোকজন যাচ্ছে। আর কি আশ্চর্য! প্রত্যেকটা মানুষ ওই কচু গাছের ধার দিয়ে যাওয়ার সময় কুনিটি ক্রুদ্ধ আক্রোশে সেই মানুষের দিকে লাফিয়ে পড়ছে। ছোট ব্যাঙের নাচুনিকুদুনি তারা খেয়াল করছে না।
অভিজ্ঞ প্রবীণ ভাবেঃ আরে ব্যাঙটা তো গুপ্তধন পাহারা দিচ্ছে। তা না হলে এমন আচরণ করবে কেন?
প্রবীণ তার ছেলেপেলেদের ডাকে। খুন্তি শাবল নিয়ে আসতে বলে। তারা হৈচৈ করতে করতে অকুস্থলে আসে।
প্রবীণ বলেঃ এই বাজানরা, ঐ কচু গাছটার নিচে গুপ্তধন আছে। খুন্তি কোদাল শাবল দিয়া মাটি খুর্দ, মাল পাইবা।
ছেলেরা মাটি খুঁড়তে থাকে। ওদিকে কুনি ব্যাঙ প্রথমে লম্ফঝম্প শুরু করে। কিন্তু বেশি মানুষের হৈহল্লা আর কোদাল শাবল দেখে ভয় পেয়ে যায়। কোদালের প্রথম কোপেই বের হয় একটা কানা পয়সা। পয়সাটা কম বয়সের একজন হাতে নিয়ে প্রবীণকে দেখাতে যাবে অমনি ব্যাঙটি লাফ দিয়ে তার হাতে পড়ে। লোকটি ঘটনার আকস্মিকতায় ভড়কে যায় তবে হাত ঝাড়া দিয়ে ব্যাঙটিকে মাটিতে ফেলে দেয়।
প্রবীণ কাণ্ড দেখে হো হো করে হেসে ওঠে বলেঃ আমার অনুমান সত্য গুপ্তধন ঐ অচল পয়সাডাই। আর এই গুপ্তধনের মালিক কুনি ব্যাঙ। সে তার গুপ্তধন পাহারা দিতেছিল তাই এত প্যাট ফোলাইনা গোস্বা, চোখ কপালে তুইল্যা রাখা। এত লাফ-ঝাঁপ ট্যাকার গরম আছে না!

No comments:

Post a Comment

Popular Posts