উল্টো জব্দ - মজার গল্প – হাসির গল্প – ছোট গল্প |
উল্টো জব্দ - মজার গল্প – হাসির গল্প – ছোট গল্প
গ্রামের এক বড়োসড়ো বাজার। মানুষজনের আগমন, বেচাকেনার ধুমধাম আর পকেটমার, চাপাবাজ, টাউটবাটপাড়ের আনাগোনাও কম নয়। সেই বাজারের এক কোণায় একটু নিরিবিলিতে
দুতিনটে হোটেল। সেই হোটেলগুলোর একটার ভেতরে বসে হোটেল মালিক ও তার এক বন্ধু
গল্পগুজবে ব্যস্ত ছিল।
তখন একটা লোক বড় একখানা ধামা হাতে করে হোটেলের সামনের
রাস্তায় দাঁড়ালো। তার থুতনিতে ছাগলা দাড়ি, মুখে বসন্তের
দাগ, চোখ কোটরগত, মাথাভর্তি টাক। দেখতে অনেকটা আদালতে
মিথ্যাসাক্ষ্য দেয়া পেশাদার সাক্ষীর মতো। লোকটি ইতি উতি তাকাচ্ছিলো। বোঝা যাচ্ছিল
সে কাউকে খুঁজছে।
হোটেল মালিকের বন্ধু বললঃ লোকটা চোরের মতো এদিক ওদিক
তাকাচ্ছে। মনে হচ্ছে মতলব সুবিধার না। হোটেল মালিক বলে : না, কারু জন্য অপেক্ষা করছে। তাই আগন্তুকের দৃষ্টি পথের দিকে বার বার উদগ্রীব হয়ে
তাকাচ্ছে। হোটেল মালিকের বন্ধু বলে, যেভাবে
তাকাতাকি করছে, তাতে একে একটু প্যাচে ফেলা যায় না? একটু রগড় তো হবে!
হোটেলঅলা : চেহারা দেখে মনে হয়, সহজ মাল না। তবে যেভাবে ব্যাক্কলের মতো হাবভাব করছে তাতে ভালমতো বিপদে ফেলা
যায়। তবে তা না করে রগড়ের ঢংয়ে একটু চিকনে মাইর দিয়া কিছু আদায় করা যায়।
বন্ধু : চাঁদাবাজির যুগে বুদ্ধিটা মন্দ না। হোটেলঅলা
বন্ধুকে নিয়ে বাইরে আসে। বাইর আসার আগে বাবুর্চিকে ডেকে গোশতে খুশবুদার মসলা
দিয়ে বাগাড় দিতে বলে। ফলে অল্প সময়েই রান্না করা গোশতের গন্ধে চারদিক ম’ ম’ করতে থাকে।
হোটেল মালিক ছাগলদাড়ি টাকমাথার কাছে যেয়ে বলে : ‘ঐ মিয়া, ক্ষিদা লাগছে? হইটালের ভিতরে আইসা অর্ডার দেন, যা খুশি খান।
তারপর বিল মিটাইয়া চইল্যা যান। তা না কইরা রাস্তায় খাড়াইয়া অর্ধেক খাওন
খাইতেছেন। এইডা কী কারবার!’
লোকটি : অর্ধেক খাওন খাইতেছি মানে? আমি একজন মানুষের জন্য খাড়াইয়া আছি।
হোটেল মালিক : মিয়া, ফাকতালে অর্ধেক
ভূরিভোজনের তালে আছেন তা বুঝি না মনে করছেন? জানেন না, ঘ্রাণ শুকলে অর্ধ ভোজন হয়ে যায়! দাম ফালান।
লোকটা হঠাৎ অন্য রকম হয়ে যায়। দৃষ্টি কঠোর, চোয়াল শক্ত এবং চেহারায় প্রচণ্ড আস্থা। ফিচকে হাসি হাসে। তারপর বলে : ‘ও ঘ্রাণেই অর্ধ ভোজন’ এর সেই গল্প? রান্নায় জিহ্বায় পানি আনা গন্ধ তো ঠিকই পাচ্ছি। নাক সুখ পাচ্ছে, কিন্তু উদর (পেট) তো চো চো করেও পাচ্ছে না কিছু!’
এই বলে সে কুচকানো পাঞ্জাবির পকেট থেকে আটআনা পয়সা বের করে
হোটেলঅলার কানের কাছে কয়েকবার টং টং করে বাজিয়ে বলে: আমার নাকের সুখানুভূতিতে
অর্ধেক ভোজন যদি হয়ে থাকে, তাহলে পয়সার টং টং শব্দ কানে শুনে
তোমারও অর্ধেক দাম পাওয়া হয়ে গেছে। ইবার ফুট (এইবার ভাগো)। গিরিঙ্গি কইরো মানুষ
চিনা।
No comments:
Post a Comment